ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদৎ বার্ষিকী পালন করেছে জেলা বিএনপি
আমার ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শহিদ প্রেসিডেন্ট বীর উত্তম জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদৎ বার্ষিকী উদযাপন করেছে জেলা বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
শুক্রবার ৩০ মে শহরের পৌর কমিউনিটি সেন্টারে এ আয়োজন করা হয়। পৌর কমিউনিটি সেন্টারে সকাল ১০টায় আলোচনা, দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপি’র অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল।
অনুষ্ঠানে সভাপতি বলেন, ১৯৭১ সনে দেশ যখন ক্রান্তিলগ্নে তখন শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সনে দেশ যখন পুনরায় ক্রান্তিলগ্নে পৌঁছে ঠিক তখনই ৭ই নভেম্বর সিপাহী জনতা সাথে নিয়ে বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ গঠনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
দেশ যখন স্বৈরাচার এরশাদের দখলে তখন জামাত ও আওয়ামীলীগ সম্মিলিতভাবে ১৯৮৬ সনে রাতের আঁধারে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে স্বৈরাচারী এরশাদকে বৈধতা করে দেয়। আমাদের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১৯৯০ সনে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়েছিল। দেশের ক্রান্তিলগ্নে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা ও তারেক রহমানের অবদান রয়েছে। ১৯৭১ সন থেকে ১৯৭৫ সন পর্যন্ত তলাবিহীন দেশে পরিণত হয়েছিল ঠিক তখন শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ওআইসি সম্মেলনে সৌদি আরব গিয়ে তৎকালীন সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন আমরা ভিক্ষা চাই না, আমরা আমাদের সাড়ে সাত কোটি মানুষের কর্মের যোগান চাই। তারপর থেকে বিদেশের চাকরি সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরতে শুরু করে।
তিনি আরো বলেন, আমি একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। ১৯৭৮ সনে গার্মেন্টস প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে গার্মেন্টস শিল্পের সূচনা শুরু হয়েছিল। ১৯৯০ সনে যেভাবে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়েছিলাম ঠিক তেমনিভাবে বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারকে মাননীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা যে আন্দোলন করেছিলাম তার ফলশ্রæতিতে ফ্যাসিস্ট সরকারকে জুলাই আগস্টের বিপ্লবের মাধ্যমে পতন ঘটিয়েছি। বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকার এক লক্ষ তেতাল্লিশ হাজার মামলা করেছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। শুধু জুলাই আগস্টে ৪২২জন আমাদের জাতীয়তাবাদী বিএনপির নেতাকর্মী নিহত হয়েছে।
এই বিপ্লব কারো একার বিপ্লব নয়, এই বিপ্লব সমগ্র জাতির বিপ্লব। সমগ্র জাতির বিপ্লবের মাধ্যমে আজকে ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় নিয়েছে। কেউ যদি মনে করে কারো একার বিপ্লব তাহলে সেটা তাদের ভুল ধারণা। এই বিপ্লবে ধারণা মূলত একটি স্বাধীন নির্বাচন। অতি দ্রæত সুষ্ঠ নির্বাচন দেয়ার জন্য অন্তবর্তী সরকারের কাছে দাবি করেন। যত সংস্কার আছে সবই করবে একটি নির্বাচিত সরকার। তিনি তারেক রহমানের বক্তব্য পুনরাবৃত্তি করে বলেন, দিল্লি নয়, পিন্ডি নয়, নয় কোন অন্য দেশ, সবার আগে বাংলাদেশ। আমাদের মূল অনুপ্রেরণা এই দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সিনিয়র সহসভাপতি জহিরুল হক খোকন, সহসভাপতি এডভোকেট শফিকুল ইসলাম, সহসভাপতি এডভোকেট গোলাম সোরায়ার খোকন, এডভোকেট তারিকুল ইসলাম রোমা, এবিএম মোমিনুল হক, এডভোকেট আনিছুর রহমান মঞ্জু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আজম, আসাদুজ্জামান শাহীন, জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদ।
এছাড়া জেলা বিএনপির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেৃতবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা ও দোয়া মাহফিল শেষে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মাঝে তাবারক বিতরণ করা হয়।